সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য পানির বিকল্প নেই। ডিহাইড্রেশন বা পানির অভাব হলে শরীরে রোগ-ব্যধীর আশঙ্কা বেড়ে যায়। পরিমিত পানি দেহের টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। অন্যদিকে অতিরিক্ত পানি পান করার ফলে হতে পারে ওভার-হাইড্রেশন। যার প্রভাবে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা কমে মগজ স্ফীত হয়ে মস্তিষ্কের হাইড্রেশন সেনসিং মেকানিজম ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাই বিশেষজ্ঞগণ একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে দিনে ৩-৪ লিটারের মতো বিশুদ্ধ পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছন।
অতিরিক্ত পানি পানের ক্ষতিকর দিকঃ
- অতিরিক্ত পানিরপানের ফলে কিডনি তরল নিঃসরণে অক্ষম হয়ে পড়ে। তাই শরীরে অতিরিক্ত পানি জমা হয়ে ডায়ারিয়া ও বমিভাবসহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
- অতিরিক্ত পানি-পানে মস্তিষ্ক আকারে বড় হয়ে মাথার খুলিতে চাপ দেয়, এ কারণে অনেক সময় কঠিন মাথাব্যথা হতে পারে।
- রক্তের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে হৃৎপিণ্ড ও রক্তনালীর উপর বাড়তি চাপ পড়ে।
- শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের মাত্রা কমে গিয়ে দেহ তার ভারসাম্যতা হারাতে পারে।
- প্রসাবের পরিমাণ বাড়ে। তাই স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি প্রসাব হলে দেহ থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপাদান বেরিয়ে যায়।
- অতিরিক্ত পানিরপান করার ফলে হাইপোনেট্রেমিয়া নামক পানির নেশা হতে পারে। এটি হলে রক্ত প্রবাহে অতিরিক্ত কম সোডিয়ামের কারণে কোষের ভেতরটা ফুলে গিয়ে খিঁচুনি ও কোমার মতো মারাত্মক সমস্যা তৈরি হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
বিভিন্ন সময়ে পানি খাওয়ার উপকারিতাঃ
- ঘুম থেকে ওঠে ১ গ্লাস পানিরপান করলে শরীরের সব অঙ্গ সক্রিয় হয়ে ওঠে।।
- খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে ১ গ্লাস পানি-পান করুন। এতে পৌষ্টিক রসের ঘনত্ব পাতলা হয়ে হজমে সহায়ক হবে।
- গোসলের আগে ১ গ্লাস পানিরখেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থকবে।
- ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১ গ্লাস পানিরপানে সারা রাত দেহে ফ্লুইডের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে এবং হার্ট বার্ন ও অ্যাসিডিটি হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কমে যায়।
জেনে রাখুনঃ
- শরীরচর্চার আগে ২-৩ গ্লাস পানিরপান করুন। এতে শরীরে তরলের ভারসাম্যতা বজায় থাকে।
- তৃষ্ণার্ত ছাড়া পানিরপান করলে বুঝবেন আপনি অতিরিক্ত পানিরপান করছেন। তাই তৃষ্ণা বুঝে পানি পান উত্তম।
- একজন মানুষ সাধারণত দিনে ৬-৮ বার প্রসাব করে। ১০ বারের বেশি প্রসাব করলে অতিরিক্ত পানি পান করেছে বলে ধরা হয়।
আরও পড়ুনঃ দুধ খাওয়ার আগে আপনার যা জানা প্রয়োজন।
- স্বাভাবিকভাবেই প্রসাব হালকা হলুদ বর্ণ হয়ে থাকে। প্রসাব যখন একেবারে পরিস্কার হয়ে যাবে তখন বুঝবেন আপনি অতিরিক্ত পানির পান করেছেন।
- শরীর চর্চার পর একেবারেই পানিরপান করা উচিত নয়।
- খাওয়ার আগে বা পরে অতিরিক্ত পানিরপান করা যাবে না।
পরামর্শঃ
- কখনো তাড়াহুড়া করে পানিরপান করবেন না।
- খাবার খাওয়ার ১ ঘণ্টা পর পানি পান করুন।
- কাজের ফাঁকে ক্ষুধা লাগলে কিছু না খেতে পারলেও এক গ্লাস পানির পান করতে ভুলবেন না।
- বিশুদ্ধ পানির পান করার সুবিধার জন্য সঙ্গে পানির বোতল রাখতে পারেন।
- খাবার খাওয়ার সময় ঘন ঘন পানির পান করা থেকে বিরত থাকুন।