শিশুরা হলো অনুকরণ প্রিয়। তারা সবার আচার-আচরণ, প্রকৃতি ও চারপাশের অবস্থার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে চায়। শিশুদের ভালো ও খারাপ অভিজ্ঞতাগুলো মস্তিস্কের বৃদ্ধির উপর প্রভাব ফেলে। অভিভাবক হিসাবে আমরা শিশুর শিক্ষাগত সাফল্যের জন্য যত্নশীল হলেও শিশুদের বেড়ে ওঠার সময় বেশ কিছু ভুল পন্থা অবলম্বন করি এবং শিশুর মানসিক বিকাশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এড়িয়ে যাই। আমরা যদি সচেতন হই সুন্দর হতে পারে শিশুর জীবন, সাবলম্বী ও মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে শিশু ।

শিশু কে স্বাধীনতা দিনঃ

শিশুদের মধ্যে কোন প্রতিভা লুকিয়ে আছে  জন্মের সঙ্গে সঙ্গে তা অনুমান করা যায় না।  বিশেষজ্ঞরা বলেছেন- “নিজের মতো বেড়ে ওঠা শিশুরা ব্যক্তিজীবনে বেশি সফল হয়”। তাই নিজের জগত সাজাতে প্রতিটি শিশুরই স্বাধীনতা প্রয়োজন।

অন্য শিশুদের সাথে তুলনা করবেন নাঃ

নিজ শিশুকে অন্য শিশুদের সাথে তুলনা করলে তার আত্মবিশ্বাস ভেঙ্গে যায়, মানসিক চাপ বাড়ে এবং স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা বাধাগ্রস্থ হয়। এই ভুলটি কখনো করবেন না।

খেলাধুলা ও বিনোদনের সুযোগ দিনঃ

শিশুদের পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা ও বিনোদনের সমান সুযোগ দেয়া উচিত। এসময় তারা নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করে অন্যান্যদের সাথে আলোচনা করে মানসিক চাপ মুক্ত হয়।

বেশি প্রত্যাশা করবেন নাঃ

শিশুদের থেকে বেশি প্রত্যাশা করতে গিয়ে নিজের স্বপ্ন তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া ঠিক নয়। শিশু বড় হলে সে নিজ থেকেই নিজের দায়িত্ববোধ ও বাবা-মায়ের চাহিদা বুঝতে শুরু করে।

সমালোচনা ও ঠাট্টা না করাঃ

মজা করার জন্য শিশুদের সামনে কারো সমালোচনা ও তাদের সাথে কোনো ধরণের ঠাট্টা করা যাবে না। শিশুদের বুঝাতে হবে, সমালোচনা অন্যদের কষ্ট দিতে পারে তাই অন্যদের সম্পর্কে মন্তব্য করা উচিত নয়।

কৃতজ্ঞ ও ভদ্র হওয়াঃ

শিশুকে কৃতজ্ঞ ও ভদ্র হতে শেখান। শিশুদের মধ্য নম্র মনোভাব গড়ে তুলতে উৎসাহিত করুন। দয়া করে, ধন্যবাদ ও দুঃখিত এ তিনটি শব্দ শিখাতে থাকুন, এতে আপনার সন্তান উষ্ণ হৃদয়গ্রাহী মানুষ হিসেবে গঠন হবে।

আরও পড়ুনঃ শিশুদের স্কুলের টিফিন বা নাস্তা কেমন হওয়া উচিত

ভদ্র ও সভ্য করে গড়ে তোলাঃ

বড়দের সম্মান করা, ছোটদের স্নেহ করা, অন্যদের সাহায্য করা, অসহায়দের দান করা ও পরস্পর মিলেমিশে থাকা ইত্যাদি সন্তানকে শেখান। নিজেদের সংস্কৃতি সম্পর্কে তাদেরকে জানানোর চেষ্টা করুন।

শিশুদের দায়িত্ব দিনঃ

বয়স ও সামর্থ্য অনুযায়ী শিশুদের হালকা কাজের দায়িত্ব দিন। এতে তার দায়িত্ববোধ বৃদ্ধি পাবে। তবে মনে রাখবেন শিশুদের সামর্থ্যের বাইরে আবেগপ্রবণ হয়ে কখনো কোনো কাজ তাদের উপর চাপিয়ে দিবেন না।

শিশুদের আবদারে রাগ নয়ঃ

শিশুদের বায়না বা আবদারে কখনোই নেতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করবেন না। ছোটখাটো ব্যাপারে শিশুদের ছাড় দিন।

শিশুদের ভুল বুঝিয়ে দিনঃ

শিশুরা ভুল করলে তাদেরকে উৎসাহ দিয়ে বুঝিয়ে দিন। তারা তাদের ভুল থেকেই শিক্ষা নেবে এবং সেটা তাদের ভবিষ্যতের জন্য সুফল বয়ে আনবে।

ঠিক সময়ে ঘুমানোঃ

তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যাওয়া এবং তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার একটি রুটিন করে দিন। সুস্থ থাকতে একজন শিশুর নিয়মিত ৮ ঘণ্টা ঘুমানো নিশ্চিত করুন।

ধর্মীয় কাজে সক্রিয় রাখুনঃ

ধর্মীয় নিয়ম-নীতি পুরোপুরি মেনে চলতে উৎসাহ দিন। সময় করে ধর্মীয় মনীষীদের জীবনী পাঠকরে তাদেরকে শুনান।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যঃ

শিশুদের জন্য নিয়মিত পুষ্টিকর ও সুষম খাবার গ্রহণ নিশ্চিত করুন। তাদেরকে সাস্থ্যসম্মত সুস্বাদু নানা রঙের খাবার খেতে উৎসাহ দিন।

নিয়ন্ত্রিত প্রযুক্তির ব্যাবহারঃ

শিশুদের সামনে যতটুকু সম্ভব প্রযুক্তির ব্যবহার সীমিত করুন। প্রযুক্তির বাইরে গিয়ে শিশুদের সময় দিন।

শিশু