Spread the love

ডিম পুষ্টি উপাদানে ভরপুর একটি প্রাকৃতিক খাদ্য। ডিমের মধ্যে প্রোটিন, মিনারেল, ভিটামিন, এনজাইম ও অ্যামাইনো এসিড এমনভাবে বিন্যস্ত থাকে যে এটা শরীরের সব ধরণের পুষ্টির অভাব পূরণ করে শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের জন্য ডিম উপাদেয় খাদ্য। বেশিরভাগ ডাক্তারই স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় ডিম রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এজন্য বলা হয় “যদি সুস্থ থাকতে চান, প্রতিদিন একটি করে ডিম খান”।

ডিম হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়

চীনে প্রায় ৫ লাখ লোকের ওপর গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, প্রতিদিন একটা করে ডিম খেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমতে পারে।

বৃদ্ধ বয়সে চোখের ক্ষতি ঠেকাতে কার্যকর

ডিমে থাকা লুইটেন ও যিয়াস্যানথিন নামক দু’টি প্রয়োজনীয় উপাদান বৃদ্ধ বয়সে চোখের ক্ষতি ঠেকাতে সাহায্য করে।

প্রয়োজনীয় ক্যালোরি পাওয়া যায়

একটি ডিমে থাকে ৭০-৮৫ ক্যালোরি বা ৬.৫ গ্রাম প্রোটিন। তাই সুস্থ থাকতে রোজ পরিমিত পরিমাণে ডিম খাওয়া ভালো।

ক্যান্সার প্রতিরোধক

ডিমে থাকা ভিটামিন -ই মানব দেহের কোষ ও ত্বকে উৎপন্ন ফ্রি র‍্যাডিক্যাল নষ্ট করে দেয় এবং বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে প্রতি সপ্তাহে ৬ টি করে ডিম খেলে মহিলাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভবনা ৪০% কমে যায়।

আয়রণের অভাব পুরণ করে

ডিমে যে আয়রণ পাওয়া যায়, তা শরীরে খুব সহজে শোষিত হয়। এই আয়রণ শরীরের বিভিন্ন কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করার মাধ্যমে আয়রণের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।

রাতকানা প্রতিরোধ করে

ডিমে থাকা ভিটামিন-এ ত্বক ও চোখের কোষের সুস্থতা দান করে এবং রাতকানা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। চোখে ছানি হওয়ার ঝুঁকি কমায়।

হাড় ও দাঁত মজবুত করে

এটি ভিটামিন-ডি এর ভালো উৎস। ভিটামিন-ডি হাড় এবং দাঁত সুস্থ ও মজবুত করে।

গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপকারি

ডিমে ফলেট থাকে, যা গর্ভবতী মায়েদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিশুর জন্মগত ত্রুটি দূর করতে সহায়তা করে।

মস্তিষ্কের বিকাশ ও কার্যক্ষমতা বাড়ায়

ডিমের কুসুমে থাকা কোলিন মস্তিষ্কের বিকাশ ও কার্যক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

ডিমে থাকা কোলেস্টেরল শরীরের ক্ষতি করে না

একটি বড় সেদ্ধ ডিমে প্রায় ১৮৬.৫ গ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। গবেষণায় জানা গেছে, ডিমে যে পরিমাণ কোলেস্টেরল পাওয়া যায় তা আমাদের শরীরের কোনো ক্ষতি করে না। প্রতিদিন কুসুমসহ একটি ডিম সবার জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর।

আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস নিয়ে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা।

শিশুদের সঠিক বৃদ্ধিতে সহায়ক

ডিমে থাকা প্রোটিন শিশুদের দেহের ক্ষয়পূরণ ও সঠিক বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। এতে থাকা কোলিন শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিশুদের ক্ষেত্রে এক বছর বয়সের পর থেকে দিনে একটি এবং তিন বছরের পর থেকে দিনে দু’টি ডিম খাওয়ানো যেতে পারে।

কিশোর-কিশোরীদের সঠিক পুষ্টির জন্য

কিশোর-কিশোরীদের বিভিন্ন হরমোন ও এনজাইমের কার্যকরিতা বৃদ্ধি, লেখাপড়ায় মনোযোগী হওয়া এবং সঠিক পুষ্টির জন্য এটি খাওয়া খুবই জরুরী। কৈশর ও টিন এজ বয়সে দিনে দুটো ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যকর।

প্রাপ্তবয়স্কদের পুষ্টির ঘাটতি পূরণে সহায়ক

প্রাপ্তবয়স্কদের স্বল্প সময়ে এনার্জি পাওয়া এবং পুষ্টির ঘাটতি পূরণের জন্য অনেক উপকারি। একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তি দিনে ডিমের কুসুমসহ দুটো ডিম এবং আরও একটি ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন।

বয়স্কদের শরীরের বিভিন্ন ধরণের ক্ষয় প্রতিরোধ করে

এটি বয়স্কদের শরীরের বিভিন্ন ধরণের ক্ষয় প্রতিরোধের জন্য চমৎকার উপাদেয় খাবার। বয়স্ক মানুষের খাদ্যতালিকায় কুসুমসহ একটি এবং কুসুম ছাড়া আরও দু’টি ডিম রাখা যায়।

শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে

প্রতিদিনের নাস্তায় একটি করে ডিম খেলে সারাদিন ক্ষুধা কম লাগবে। গবেষণায় দেখা যায় সকালে খাওয়া একটি ডিম, শরীরে দিনে ৪০০ ক্যালোরি কমাতে পারে। তাই ওজন কমাতে নিয়ম করে প্রতিদিন এটি খাওয়া উচিত।

চুল ও নখের যত্নে

ডিমে থাকা সালফার চুল ও নখ ভালো রাখতে সাহায্য করে।

হজম শক্তি বাড়ায়

ডিমে থাকা ট্রিপসিন এনজাইম প্রোটিন ভেঙ্গে হজমে সহায়তা করে।

জেনে রাখুন

  • সাদা ও বাদামি ডিমের মধ্যে পুষ্টি এবং ক্যালোরির দিক থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো পার্থক্য নেই।
  • এটি পরিমাণের বেশি খাওয়া যাবে না, কারণ অতিরিক্ত প্রোটিন কিডনিতে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
  • যাদের ডিমে এ্যালার্জি হয়, একমাত্র তাদের ক্ষেত্রেই ত্বকে কোনও রকম সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নইলে এটি ত্বকের জন্য মোটেও ক্ষতিকর নয়।
  • পুষ্টিবিদদের মতে, মুরগির ডিম থেকে হাঁসের ডিম বেশি উপকারি।
  • মুরগির ডিমে যাদের এলার্জি আছে তারা হাঁসের ডিম খেতে পারেন।
  • এ্যালার্জি না হলে দিনে ২-৩ টা ডিম সবসময়ই স্বাস্থ্যকর।
  • ডিমে ওমেগা-৩ থাকায় রক্তে ক্ষতিকর ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমে।
  • কাঁচা খাওয়া ঠিক নয়। কাঁচা ডিমে থাকা স্যালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া ফুড পয়জিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটায়।
  • রান্না করার পর দ্বিতীয় বার গরম করলে ডিমে থাকা নাইট্রোজেন অক্সিডাইজড হয়, যা ক্যান্সারের অন্যতম কারণ।


Spread the love