Spread the love

হামিংবার্ড পৃথিবীর সবচাইতে ক্ষুদ্র ও চঞ্চল পাখি। তারা তাদের অবিশ্বাস্য উড়ন্ত ক্ষমতার জন্য বিখ্যাত। এ পাখিটি তার বায়বীয় অ্যাক্রোব্যটিকসের সাহায্যে সবাইকে অবাক করে সামনে-পিছনে, উপর-নিচ, ডানে-বামে সবদিকে সমান ভাবে দ্রুত উড়তে পারে। তাদের স্পন্দনশীল রঙ এবং মনোমুগ্ধকর আচরণের কারণে তারা পাখি পর্যবেক্ষক এবং ফটোগ্রাফারদের কাছে খুবই প্রিয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক এ পাখিটি সম্পর্কে মজার কিছু তথ্য।

হামিংবার্ড সম্পর্কিত মজার তথ্য

  • হামিংবার্ডের বাসা একটি ছোট আখরোটের সমান।
  • এরা সেকেণ্ডে ৮০ বারের মতো ডানা ঝাপটাতে পারে।
  • এরা খুব দ্রুত ডানা ঝাপটানোর ফলে বাতাসে গুণগুণ শব্দ হয়। এই গুণগুণকে ইংরেজিতে বলা হয় Humming আর এ Humming থেকে হয়েছে Hummingbird ।
  • যেখানে মানুষের হার্টবিট মিনিটে হয় ৭০-১০০ বার সেখানে হামিংবার্ডের হার্টবিট মিনিটে ১২৬০ বার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • এ পাখিগুলো মিনিটে ২৫০ বারের মত শ্বাস নেয়।

  • হামিংবার্ডের ওড়ার সাথে রকেটের বিশেষ মিল রয়েছে। রকেট যেমন ভূমি থেকে সোজা উপরে ওঠে এবং নিচে নামে হামিংবার্ডও তেমনি সোজা উপরে ওঠে এবং নিচে নামে।
  • হামিংবার্ডের গড় দৈর্ঘ্য ৩ থেকে ৫ ইঞ্চি বা ৭.৫ থেকে ১৩ সেন্টিমিটার।
  • ‘Bee Hummingbird’ সবচেয়ে ছোট প্রজাতির Hummingbird । যা শুধুমাত্র কিউবাতে পাওয়া যায়। এদের দৈর্ঘ্য ৫ সেন্টি মিটার এবং ওজন ২ গ্রামেরও কম। আর সবচেয়ে বড় প্রজাতির Humming bird হলো ‘Giant Hummingbird’। যা দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পার্বত্য অঞ্চলে পাওয়া যায়। এদের দৈর্ঘ্য ২৩ সেন্টিমিটার এবং ওজন ১৮ থেকে ২৪ গ্রাম।
  • উড়ন্ত অবস্থায় এ পাখিগুলো তাৎক্ষণিক  থামতে পারে।
  • হামিংবার্ড তাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম।

আরো পড়ুনঃ মধু খেলেই যাদের বিপদ।

  • মহিলা হামিংবার্ড দুটি ডিম পাড়ে। ডিমগুলি ছোট মটরের আকারের হয় এবং ডিম ফোটার আগে প্রায় ১৪ থেকে ২৩ দিন ধরে তা দিতে থাকে।
  • ব্রড-টেইলড প্রজাতির হামিংবার্ড ১০,০০০ ফুট ( ৩,০০০ মিটার ) উচ্চতায় উপরে উড়তে পারে।
  • পলকে উজ্জলতা ও বৈচিত্র্যের কারণে স্ত্রী পাখিদের তুলনায় পুরুষ হামিং বার্ড দেখতে বেশি সুন্দর।
  • এ পাখিগুলো এতো সৌখিন যে তারা ফুলের পাপড়ি, কোমল পালক ও মাকড়সার জাল দিয়ে বাসাত তৈরি করে। বাসা তৈরিতে পুরুষ পাখি কোনো সাহায্য করে না।
  • এদের খাদ্য পরিপাক ক্ষমতা একটা হাতির চেয়ে ১০০ গুণ বেশি।
  • এরা নিজের শরীরের চেয়ে বেশি ওজনের খাবার গ্রহণ করে থাকে।
  • তাদের নরম তুলতুলে বাসায় তারা শুধু রাতেই বিশ্রাম নেয়।

  • তারা গড়ে ৪৫ কিলোমিতার উড়তে পারে এবং উড়ন্ত অবস্থায় শূন্যে এক জাগায় স্থির হয়ে ভেসে থাকতে পারে।
  • পাখিগুলো ছোট হলেও খুবই পরিশ্রমী হয়। সারা দিনে একটি হামিংবার্ডের যে পরিমাণ ক্যালরি লাগে, তা একজন মানুষের প্রয়োজনীয় ক্যালরির তুলনায় ৪০ গুণ বেশি।
  • এরা উড়তে উড়তেই খাবার সংগ্রহ করে।
  • হামিংবার্ডের গড় আয়ু ৩-৫ বছর। তবে ১২ বছর পর্যন্ত বাঁচার রেকর্ড রয়েছে।
  • এরা খুব সাহসী পাখি। নিজেদের এলাকা রক্ষা করার জন্য বড় বড় পাখিদেরকেও তোয়াক্কা করে না এবং দলবদ্ধ হয়ে তাদের উপর আক্রমন করে নিজেদের এলাকা ছাড়া করে ছাড়ে।
  • এদের দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি মানুষের চেয়ে অনেক বেশি প্রখর কিন্তু ঘ্রাণশক্তি খুবই দুর্বল।
  • হামিংবার্ডের ৩৬১ টির বেশি প্রজাতি রয়েছে।

  • হামিংবার্ড লাল রঙের ফুলের মধুই বেশি পছন্দ করে। তবে কিছু কিছু প্রজাতি খাবার হিসেবে পোকা-মাকড়ও গ্রহণ করে।
  • এ পাখির দুইটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এরা বিশ্রাম ছাড়াই হাজার মাইল পথ অতিক্রম করতে পারে।
  • ইতিহাস থেকে জানা যায় আমেরিকা আবিষ্কারক বিখ্যাত নাবিক ‘কলম্বাস’ যখন আমেরিকার উপকূলবর্তী অজানা দ্বীপে পৌঁছেন, তখন সেখানে এই ছোট্ট পাখিটি দেখে পোকা ভেবে ভুল করে ছিলেন।
  • কোনো ফুল থেকে মধু খেয়ে গেলে সেটা তারা সহজেই মনে রাখতে পারে। এমনকি সে ফুলে আবার কখন মধু আসবে তা তাদের স্মরণে থাকে।
  • হামিংবার্ডের শরীরের গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ১০৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • হামিংবার্ডকে মধুপায়ী মনে করা হলেও ৮৫ শতাংশ হামিংবার্ডই ফুলে থাকা ছোট ছোট পোকা খেয়ে থাকে।


Spread the love