কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যবহার করে আমাদের মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জনের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তবে সঠিক উপায় না জানার কারণে, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমরা অনলাইন ইনকাম করতে পারছি না। মনে রাখতে হবে অনলাইন থেকে আয় করতে হলে ইচ্ছা শক্তি, পরিশ্রম করার মানসিকতা তৈরি ও ধৈর্যের বিকল্প নেই। আপনি যদি প্রকৃতপক্ষে অনলাইনে আয় করতে চান তাহলে আপনাকে কমপক্ষে ৬ মাস মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে হবে। কেউ যদি ৬ মাস নিয়মিত কাজ করে তাহলে ৬ মাস পর অবশ্যই প্রতি মাসে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা বা তার চেয়ে বেশি ইনকাম করা অসম্ভবের কিছু নয়। আজ আমরা অনলাইনে আয় করার সবচাইতে সহজ ও সেরা কৌশগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
কনন্টেট রাইটিং বা ব্লগিং করে আয়ঃ
বর্তমানে সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় উপায় হচ্ছে কনন্টেট রাইটিং বা ব্লগিং করে আয় করা। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ সহ সারা পৃথিবীতে অনেক মানুষই ব্লগিং করে টাকা আয় করছেন। আপনি ইচ্ছে করলে মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে ব্লগিং করে অনেক টাকা আয় করতে পারেন। আপনি যা জানেন তা ডায়রিতে লেখার পরিবর্তে ব্লগে লিখবেন। মনে রাখবেন যে বিষয়ে আপনার পরিপূর্ণ দক্ষতা নেই সেটি সম্পর্কে লেখালেখি না করে, যে বিষয়ে আপনি সবচেয়ে বেশি দক্ষ সে বিষয়টি নিয়ে ব্লগিং শুরু করুন। আপনি ফ্রিতেও ব্লগিং শুরু করতে পারেন। তবে যদি টাকা খরচ করার সুযোগ থাকে তাহলে কিছু টাকা খরচ করে নিজের নামে একটি ওয়েবসাইট খুলে নিবেন। তারপর সেখানে আপনার দক্ষতানুযায়ী লেখা-লেখি শুরু করে দিন।
যদি আপনি আপনার ব্লগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করতে পারেন তাহলে সেই ব্লগ বিক্রি করেই লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। অনলাইনে একটি জনপ্রিয় ব্লগের চাহিদা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। তবে আপনার ব্লগের মূল্য ব্লগের জনপ্রিয়তার উপর নির্ভর করবে। মনে রাখবেন, আপনার একটি জনপ্রিয় ব্লগ আপনার ও আপনার পরিবারের অমূল্য সম্পদ।
ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে আয়ঃ
আপনি ইউটিউবে চ্যানেল খুলে, ক্যামেরা ও মোবাইল দ্বারা শিক্ষণীয় ভিডিও করে এবং ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও টিউটোরিয়াল বানিয়ে ইউটিউবে আপলোড করে অনেক টাকা আয় করতে পারেন। আপনার চ্যানেলে মনিটাইজেশন চালু হলে ইউটিউব থেকে আয় হতে থাকবে। আমাদের দেশে অনেক ইউটিউবার রয়েছেন যারা শুধুমাত্র মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ইউটিউব থেকে প্রতি মাসে ভাল টাকা আয় করছেন।
ফেসবুক থেকে আয়ঃ
আপনি ফেসবুক পেইজ তৈরি করে ভিডিও আপলোড করার মাধ্যমে আয় করতে পারেন। বর্তমানে ফেসবুকও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। ইউটিউবের মতো ফেসবুক ভিডিওতেও বিজ্ঞাপন দেখানো হয় এবং সেটির বিনিময়ে আপনার আয় শুরু হবে।
আরও পড়ুনঃ বজ্রপাত থেকে বাচঁতে আপনার করণীয়।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয়ঃ
আপনি যদি অনলাইনে অনেক টাকা আয় করতে চান, তাহলে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আনলিমিটেড টাকা আয় করতে পারবেন। আপনি এমাজন, আলিবাবা, ফ্লিপকার্ট, দারাজ ও ইভালির মতো শপিং মলের সাইটে রেজিস্ট্রেশন করে তাদের পন্যের লিংক আপনার ব্লগে শেয়ার করতে হবে। এক্ষেত্রে পন্যের লিংক শেয়ার করার পূর্বে কাঙ্খিত প্রোডাক্ট এর ভালো দিকগুলো তুলে ধরে একটি আর্টিকেল লিখতে পারেন। তখন পন্য সম্পর্কে ভিজিটররা পোস্টটি পড়ার সময় আপনার শেয়ার করা লিংকে ক্লিক করে ঐ অনলাইন শপিং মল থেকে পন্য কিনলে সেই পন্যের দাম হতে কিছুটা কমিশন আপনাকে দেওয়া হবে। উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশের মানুষও এখন বেশি পরিমাণে অনলাইন শপিং করছে। মোবাইল ব্যাংকিং চালু হওয়ার কারনে অনলাইন মার্কেটিং দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আয়ঃ
আপনি যদি একজন ভাল ফটোগ্রাফার হয়ে থাকেন তাহলে আশে-পাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ছবি, স্থানের ছবি, খাবারের ছবি ও মানুষের ছবিসহ যেকোনো মানসম্মত ছবি তুলে অনলাইনে বিক্রি করে প্রতি মাসে একটি ভাল পরিমাণের টাকা আয় করতে পারেন। Photolia, Photobucket, Shutterstock, iStock এর মত বড় বড় সাইটগুলিতে আপনার তোলা ছবি জমা দিতে পারেন। এসাইটগুলো থেকে যখনই কোনও গ্রাহক আপনার তোলা কোন ছবি কিনবে, সাথে সাথে আপনি আপনার ছবির নির্দিষ্ট মূল্য পেয়ে যাবেন। অনেকেই এই পেশায় থেকে প্রতি মাসে ১০০-৩০০ ডলারের বেশি আয় করছে।
গ্রাফিক্স ডিজাইন করে আয়ঃ
বর্তমানে ফ্রিল্যান্স মার্কেটে প্রচুর পরিমাণে গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে Upwork ও Fiver মার্কেটপ্লেসে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। Graphics design জানলে সহজে অনলাইনে আয় করা সম্ভব। গ্রাফিক্স ডিজাইনের বিশেষত্ব হচ্ছে এখানে একটি ডিজাইন অনেকবার বিক্রি করা যায়। তাই একটি ভালো নকশা থেকেই দীর্ঘদিন পর্যন্ত আয় হতে থাকে। অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলোতে গ্রাফিক্সের কাজ বিক্রি করা যায়। এডোবি ফটোশপ থেকে প্রাথমিকভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার কাজটি শুরু করতে পারেন।
SEO শিখে আয়ঃ
SEO এর পূর্ণরূপ হলো Search Engine Optimization। যেকোনো ওয়েবসাইটকে গুগল সার্চের প্রথম পাতায় নিয়ে আসার জন্য সবাই সর্বাত্মক চেষ্টায় থাকেন। কিন্তু একই ধরনের ওয়েবসাইটের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে গুগলের প্রথম পাতায় আনা খুব সহজ কাজ নয়। এ জন্য সবাই তার সাইটকে এসইও করাতে চায়। আপনি যদি ভালোভাবে SEO শিখতে পারেন, তাহলে যেকোন কোম্পানির এসইও এক্সপার্ট হিসেবে কাজ করে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করতে পারেন। আপনার যদি পার্সনাল কোন ব্লগ সাইট থাকে এসইও জানা থাকলে ট্রাফিক বৃদ্ধি করার জন্য আপনি নিজেই সেটির এসইও করতে পারেন।
অনলাইন ইনকাম