কাঁচা আম শরীরের পুষ্টির  চাহিদা পূরণের অন্যতম প্রধান উৎস। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি । কাঁচা আমে সাকসিনিক এসিড, অ্যাসকারবিক এসিড, অক্সালিক এসিড, ফরমিক এসিড সাইট্রিক এসিড, টারটারিক এসিড ও ম্যালিক এসিড থাকে। যে আমে বেশি পরিমাণে এসিড থাকে সে আম তত বেশি টক হয়।

কাঁচা আম এর পুষ্টিগুণঃ

১০০ গ্রাম পরিমাণ কাঁচা আমে রয়েছে – ক্যালসিয়াম ১৪ মি. গ্রাম, জলীয় অংশ ৮১ গ্রাম, ভিটামিন এ ১০ গ্রাম, ভিটামিন বি১ ০.০৪ মি. গ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.০১ মি. গ্রাম, আয়রণ ৫.১ মি. গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৪৬ কিলোক্যালরি, প্রোটিন ২০.১ গ্রাম, ফসফরাস ১৬ মি. গ্রাম, আঁশ ২ গ্রাম, ভিটামিন সি ১৬% এবং ।

কাঁচা আম খাওয়ার উপকারিতাঃ

  • কাঁচা আমে থাকা ভিটামিন সি শরীরের ইনফ্লামেশনের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং নতুন রক্তকনিকা তৈরিতে সাহায্য করে।
  • এটি ছোঁয়াচে রোগ প্রতিরোধ করে এবং দেহে আয়রণ শোষণের ক্ষমতা বাড়ায়ন। শরীরের কোনো অংশ কেটে গেলে রক্তপাত বাধা দেয়।
  • শরীর সতেজ রাখে, সহজে ঘুম আসতে সহায়তা করে, দেহে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ায় এটি শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

  • এতে প্রোটিনের পরিমাণ বশি থাকায় দেহকে জিবাণু থেকে সুরক্ষা দেয়।
  • বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি খেলে চোখ ভালো থাকে, দৃষ্টিশক্তি প্রখর হয় এবং রাতকানার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
  • কাঁচা আমে থাকা থাকা খনিজ লবন হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং চুল, নখ ও দাঁত মজবুত করেন।
  • এতে থাকা আয়রণ রক্তস্বল্পতা দূর করে।
  • এটি খেলে গর্ভের সন্তান সুস্থ সবল ও মেধাবী হয় এবং জন্মের পর সংক্রামক ব্যাধি কম হয়। এজন্য গর্ভবতী মায়েদের নিয়মিত কাঁআচা আম খাওয়া প্রয়োজন।
  • কিডনি সমস্যা প্রতিরোধ করে , লিভার ভালো রাখে এবং শরীরে পটাশিয়ামের অভাব পূরণ হয়।
  • রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং শরীরে পানি শূন্যতা পূরণে যথেষ্ট ভুমিকা পালন করে।

  • কাঁচা আমে থাকা প্রি-বায়োটিক ডায়াটারি ফাইবার নাম উপাদান কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।।
  • কাঁচা আমে থাকা গ্যালিক অ্যাসিড হজম প্রক্রিয়াকে গতিশীল করে।
  • এতে উপস্থিত ভিটামিন সি দাঁতের ক্ষয়, নিশ্বাসে দুর্গন্ধ ও মাড়ির রক্ত পড়া রোধ করে।

আরও পড়ুনঃ এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ এড়াতে যে সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

  • এতে উচ্চমাত্রায় পটাসিয়াম থাকায় হার্টের গতি ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
  • কাঁচা আম নিয়মিত নিয়ম করে খেলে শরীর থেকে বিষাক্ত টক্সিন বেরিয়ে যায়।
  • এটি খেলে সহজে ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • ১৭ ধরণের অ্যামাইনো এসিড থাকে কাঁচা আমে , যা দেহের পুষ্টির জন্য খুবই প্রয়োজন।

  • কাঁচা আমে রুচি বাড়ায়। যাদের জ্বর হওয়ার কারণে মুখের স্বাদ কমে গেছে তারা কাঁচা আম খেতে পারেন।
  • কাঁচা আমে রয়েছে ভিটামিন বি৬, যা মানবদেহের মস্তিষ্কে গাবা নামের এক প্রকার হরমোন তৈরি করে। যার ফলে মস্তিষ্কের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবন কমে যায়।
  • দুপুরে খাওয়ার পর কয়েক টুকরা কাঁচা আম খেলে ঝিমুনি ভাব দূর হয়।
  • রোদে পোড়া দাগে লাগালে দাগ দূর করতে কাঁচা আমের রস ভালো কাজ করে।
  • কাঁচা আমে চিনির পরিমাণ কম থাকায় এটি খেলে শরীরের বাড়তি োজন কমে যায়।
  • কাঁচা আম খেলে ঘামাচির সমস্যা দূর হয়।
  • অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে লবন তথা সোডিয়াম ক্লোরাইড ও লৌহ বেরিয়ে যায়। সে সময়কাঁচা আমের জুস খেলে এই ঘাটতি দ্রুত পূরণ হয়।
  • কাঁচা আমের টুকরা মুখে দিয়ে চিবালে অম্লতা কমে যায়।

  • কাঁচা আম শুকিয়ে পাউডার করলে একে আমচুর বলা হয়। স্কার্ভি রোগীদের জন্য আমচুর খুবই উপকারি।
  • সকালে উঠলে যাদের বমি বমি ভাব হয় বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের বমি ভাব হলে তারা কাঁচা আম খেতে পারেন।

জেনে রাখুনঃ

  • বেশি পরিমাণে কাঁচা আম খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • এর কষ ত্বকে ও চোখে লাগলে এবং পেটে গেলে ইনফেকশন হতে পারে।
  • যাদের কিডনিতে পাথরের সমস্যা রয়েছে তারা এটি ক্ষতিকর।
  • ডায়াবেটিস রোগীরা অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া ক্ষতিকর।
  • আম কেটে ফ্রিজে রাখলে পুষ্টিমান কমে যায়।

পরামর্শঃ

  • সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত মাঝারি সাইজের একটি কাঁচা আম খেতে পারেন।
  • যারা উচ্চ রক্তচাপের রোগী তারা লবন বা চিনি দিয়ে কাঁচা আম খাওয়া ঠিক নয়।
  • এটি সকাল থেকে বিকেলের মধ্য খাওয়া উত্তম। রাতে খেলে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
  • খাওয়ার পরপরই পানি পান করা উচিত নয়।