হিটলারের পুরো নাম অ্যাডলফ হিটলার। জার্মানীদের কাছে তিনি মহানায়ক হলেও, পৃথিবীর সবচেয়ে অশুভ মনের মানুষটি হলেন হিটলার। বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে স্বৈরাচারী শাসক হিসাবে তাকে আখ্যায়িত করা হয়। নৃশংসতার প্রসঙ্গে খুব কম মানুষই আছে হিটলারের সমপর্যায়ের। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময়ে অ্যাডলফ হিটলার ছয় লক্ষ ইহুদীদের মৃত্যুর জন্য দায়ী। এখানে তুলে ধরা হয়েছে হিটলার সম্পর্কে জানা-অজানা চমকপ্রদ কিছু তথ্য।
- হিটলার জার্মানিতে জন্মগ্রহণ না করেও জার্মানির চ্যন্সেলর হয়েছিলেন। অথচ তিনি জন্ম গ্রহণ করেছিলেন অস্ট্রিয়ায়।
- জন্মের পর হিটলারের নাম রাখা হয় অ্যাডলফ শিক্লগ্রাবার। ১৮৯৭ সালে তার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় অ্যাডলফ হিটলার।
- ইহুদী বিদ্বেষী হয়েও তিনি ইহুদী নারীর ভালোবাসায় পড়েছিলেন।
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধে এক বৃটিশ সৈনিক নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এক জার্মান সৈনিককে বাঁচিয়ে ছিলেন, আর সেই জার্মান সৈনিকই ছিলেন হিটলার।
- হিটলার নির্বাচনে জিতে ক্ষমতা আসেননি। প্রেসিডেন্সিয়াল ইলেকশনে তিনি হেরে গিয়ে ছিলেন। তিনি নাৎসী বাহিনী কোয়ালিশন সরকার গঠন করে ক্ষমতায় এসে জার্মানির চ্যান্সেলর হন।
- হিটলার যখন ছোট ছিলেন, তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। এক অস্ট্রিয়ান ইহুদী ডাক্তার বিনা পয়সায় তাদের চিকিৎসা সেবা দিতেন।
- ৪ বছর বয়সে হিটলার একটি লেকে পড়ে যান। তাকে উদ্ধার করেন এক ধর্মযাজক। পরবর্তীতে ঘটনাটি তার মনকে আলোড়িত করে। কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসা থেকেই তিনি বড় হয়ে ধর্মযাজক হতে ছেয়ে ছিলেন।
- তিনি প্রাণীদের দারুন ভালোবাসতেন। তাই প্রাণীদের ওপর কোন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার বিরোধিতা করতেন।
- তরুন বয়সে ব্যাপক ধূমপান করলেও, এক জার্মান ডাক্তার ধূমপান ও ফুসফুস ক্যান্সারের মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে আবিষ্কারের পর ধূমপানের ঘোর বিরোধী হয়ে পড়েন হিটলার। ১৯৩০ সালে তিনিই প্রথম এন্টি-স্মোকিং ক্যাম্পেইন করেন। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত নিজস্ব মিলিটারিদের মধ্যেও কঠোরভাবে ধুমপান নিষিদ্ধ করেন তিনি।
- তিনি দুইবার “Academy of fine arts Viyena” তে ভর্তির জন্য আবেদন করেছিলেন ১৯০৭ ও ১৯০৮ সালে এবং দ্বিতীয়বার তিনি খুবই কঠোর ভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন যে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণেরই অনুমতি পাননি। কিন্তু এখনো শিল্প বোদ্ধারা মনে করেন যে, হিটলার ছিলেন একজন গুণী শিল্পী। তিনি একশো এর অধিক চিত্রকর্ম ও পোস্টকার্ড তৈরি করেছিলেন।
- মনে প্রাণে চাইতেন দেশ থেকে ইহুদি নির্মূল হোক। কিন্তু কখনোই কোনো বন্দি শিবির পরিদর্শনে যাননি হিটলার।
- আমেরিকা, ব্রিটেন ও রাশিয়ার মতো পরাশক্তিকে যুদ্ধের ময়দানে কুপোকাত করলেও, হিটলার ভীষণভাবে বিড়ালকে ভয় করতেন।
- হিটলার ক্ষমতায় থাকাকালে প্রত্যেক নবদম্পতির বিয়ের অনুষ্ঠানে সরকারের পক্ষ থেকে তার অত্মজীবনী “মেইন ক্যাম্ফ” বইটি উপহার দেয়া হতো।
- আমেরিকার সিআইএ হিটলারের খাবারে ফিমেল হারমোন মিশিয়ে হিটলারের স্বভাবে মেয়েলিপনা আনার চেষ্টা করেছেন বলে গুজব রয়েছে।
- হিটলার কঠিন গ্যাস্ট্রিকের রোগী ছিলেন। কথিত আছে তিনি নানারকমের প্রায় আটাশটি ঔষধ প্রতিদিন সেবন করতেন।
- লন্ডন প্রবাসী হিটলারের ভাগ্নে ১৯৩৯ সালে পত্রিকায় একটি কলাম লিখেন “ কেন আমি আমার মামাকে ঘৃণা করি” শিরোনামে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ প্রান্তে হিটলারের নির্দেশে জার্মান বোমারু বিমান লন্ডনে তার ভাগ্নের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করেছিল।
- নিজেকে যথেষ্ট সুদর্শন মনে করতেন হিটলার। তিনি জনসম্মুখে নিজেকে সিঙ্গেল দাবী করতেন।
- তিনি ছিলেন কঠোর নিরামিষভোজী।
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি যুদ্ধরত অবস্থায় আঘাত পেয়েছিলেন। সার্জারিতে চিকিৎসক তার একটি অণ্ডকোষ বের করে ফেলেন। তার জীবন বাঁচাতেই এ কাজটি করতে হয়। ১৯১৬ সালে ব্যাটল অব সোমি-তে এমন ঘটনা ঘটেছিল।
- তিনি সবসময় তার মায়ের ছবি সাথে রাখতেন।
- ১৯৩৯ সালে হিটলার শান্তিতে নোবেল পুরষ্কারের জন্য মনোনীত হওয়ার পর সেটি বাতিল করা হয়।
- তিনি কখনো গাড়ি চালানো শেখেননি। গাড়ি চালানোকে তিনি যথেষ্ট কঠিন কাজ মনে করতেন।
- হিটলার চেয়ে ছিল ইহুদী জাতিকে বিলুপ্ত করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তাদের ঐতিহাসিক সামগ্রী নিয়ে একটা জাদুঘর বানাবেন। ইহুদীদেরকে তিনি শুধু জাদুঘরেই ঠাঁই দিতে চেয়ে ছিলেন।
- মিত্রবাহিনীর সেনারা যখন জার্মানিতে অবতরন করে, হিটলার তখন গভীর ঘুমে মগ্ন ছিল। তার জেনারেলদের কেউ সাহস করেননি ঘুম ভাঙ্গিয়ে তাকে এই খবরটা জানাতে। হিটলারের অনুমতি ছাড়া মিত্রবাহিনী প্রতিরোধ করার মতো সৈন্য পাঠানোর এখতিয়ার কারো ছিল না।
- আত্মহত্যার আগে হিটলার তার পোষা কুকুরকে সায়ানাইড পিল খাইয়ে মেরে ফেলে ছিল এবং কুকুরের পাঁচটি বাচ্চাকে গুলি করে হত্যা করে ছিল।
- মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা আগে প্রেমিকা ইভা ব্রাউনের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন হিটলার।
- ১৮৮৯ সালের ২০শে এপ্রিল অস্ট্রিয়ায় হিটলারের জন্ম হয়। মৃত্যু হয় ১৯৪৫ সালের ৩০শে এপ্রিল (!)। কেউ কেউ বিশ্বাস করে হিটলার মরেনি, তিনি আত্মগোপন করেছেন।
Thanks